প্রকাশিত: ১৩/১০/২০১৭ ৯:২৪ পিএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ১২:১৯ পিএম

নিউজ ডেস্ক::

রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বাংলাদেশ থেকে রাখাইনে ফিরিয়ে নিতে ১০ বছর লাগতে পারে। এ লক্ষ্যে নভেম্বর থেকে শুরু হতে পারে শরণার্থীদের যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া।

বুধবার জাপানের নিক্কেই এশিয়ান রিভিউকে এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেছেন মিয়ানমারের সমাজকল্যাণ, ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রী উন মিয়াত আয়ে।

তবে পরিকল্পনার এই ধীরগতি বাংলাদেশের জন্য গভীর উদ্বেগের বিষয়। রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার পথে জটিল যাচাইকরণ প্রক্রিয়া বড় বাধা হয়ে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা প্রবল।

মিয়ানমার মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। তবে প্রতিদিন বড়জোর ১০০ থেকে ১৫০ জন রোহিঙ্গা ফেরত নেওয়া হতে পারে। এই গতিতে পুরো প্রক্রিয়া শেষ হতে প্রায় একদশক লাগবে।

উন মিয়াত আয়ে বলেন, বাংলাদেশ-মিয়ানমার যদি সমঝোতায় পৌঁছতে পারে তাহলে আমরা আগামী মাস থেকে কাজ শুরু করতে পারব।

রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন প্রক্রিয়া দ্রুত শুরু করতে মিয়ানমারের ওপর চাপ দিয়ে আসছে বাংলাদেশ। তবে ঠিক কীভাবে এ প্রক্রিয়া শুরু হবে তা নিয়ে দুই দেশের মতবিরোধ শেষ হচ্ছে না। গত ২৫ আগস্টের পর থেকে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে কমপক্ষে সাড়ে ৫ লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে এসেছে। তবে উন মিয়াত আয়ে বলেন, বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের সংখ্যা কত তা আমরা জানি না। তবে যেসব রোহিঙ্গা মিয়ানমারে ফিরে আসতে ইচ্ছুক এবং তাদের মধ্যে যাদের মিয়ানমারের সাবেক বাসিন্দা হিসেবে চিহ্নিত করা যাবে, তাদের ফিরে আসার অনুমোদন দেওয়া হবে। ওই সাক্ষাৎকারে উন মিয়াত আয়ে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে তিনটি প্রধান শর্ত পূরণের কথা বলেছেন। পুনর্বাসন প্রক্রিয়া অবশ্যই শরণার্থীদের ইচ্ছে অনুযায়ী হতে হবে। কোনো রোহিঙ্গা মিয়ানমারে ফিরতে চাইলে তার কাছে থাকা তার পরিচয়সংক্রান্ত নথিপত্রের সঙ্গে মিয়ানমার সরকারের কাছে থাকা নথিপত্রের মিল থাকতে হবে। আর যেসব রোহিঙ্গা তাদের পরিবার থেকে আলাদা হয়ে গেছে তাদের বাংলাদেশের কোনো আদালত থেকে একটি অনুমোদন নিয়ে আসতে হবে। যারা তাদের পরিচয়পত্র হারিয়ে ফেলেছেন তাদেরও ফিরিয়ে নেওয়া হবে। তবে সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকারকে তাদের সাবেক নাম, পিতা-মাতার নাম ও বাসস্থান সম্পর্কিত তথ্য সরবরাহ করতে হবে। যদি মিয়ানমার সরকারের কাছে থাকা তথ্যের সঙ্গে ওই তথ্যের মিল থাকে, তাহলেই তাদের ফিরিয়ে নেওয়া হবে। যারা ফেরত যেতে ইচ্ছুক তাদের সীমান্তের চেকপয়েন্টে একদিন থেকে দেড় দিন সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতে পারে। এ সময়ের মধ্যে তাদের পরিচয়সংক্রান্ত কাগজপত্র বারবার চেক করা হবে। পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়ার পরই তাদের বাড়িতে যেতে দেওয়া হবে। আর যেসব রোহিঙ্গার গ্রাম পুড়ে ছাই হয়ে গেছে তাদের রাখাইন রাজ্যের একটি অস্থায়ী শিবিরে অবস্থান করতে হবে। যতদিন না মিয়ানমার সরকার তাদের বাড়িঘর আবার নির্মাণ করে দেয়, ততদিন সেখানেই থাকতে হবে।

পাঠকের মতামত